সোমবার, ৭ মার্চ, ২০১১

বোরকা পরার "অপরাধে" আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে নির্যাতিত তিন মুসলিম মহিলার কাহিনীঃ

বোরকা পরার "অপরাধে" আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে নির্যাতিত তিন মুসলিম মহিলার কাহিনীঃ ধারাবাহিক-১


আমরা বলব তিন জন মুসলিম মহিলার কথা। বলব তাদের জীবনের ২০ দিনের বিভীষিকাময় এক ঘটনার কথা। ৯০% এর বেশী মুসলমানের দেশে পর্দা করার কারণে তাদের জীবনে নেমে এসেছিল ভয়াবহ এক নির্যাতন। বলব সেই কাহিনী ধারাবাহিক ভাবে। থাকবে জাতীয় দৈনিকের রেফারেন্স।
তাদের নামঃ
১। ফৌজিয়া আক্তার- ছাত্রী, অ্যাকাউন্টিং বিভাগ ১ম বর্ষ, পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ
২। তানিয়া আক্তার- পিরোজপুরের একটি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা
৩। জেসমিন নাহার-ছাত্রী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স ১ম বর্ষ।

৩ জুলাই ২০০৯ইং - ঘটনার শুরুঃ- পর্দানশীল ৩জন মহিলাকে ছাত্রলীগ নামধারী বখাটেদের নির্দেশে আটক
ফৌজিয়া আক্তার ও তানিয়া আক্তার তাদের বান্ধবী জেসমিন নাহারের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। তারা পিরোজপুর থেকে বাসে উঠে বালিপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নামেন। জেসমিন নাহার তাদের এগিয়ে নিতে বাসস্ট্যান্ডে আসেন। তারা তিন জনই হিজাব পরিহিতা ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন বখাটে যুবক তাদের উত্ত্যক্ত করে এবং তারা তানিয়া আক্তারের হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। বখাটে যুবকদের হাত থেকে বাঁচার জন্য তারা স্থানীয় বালিপাড়া সিনিয়র মাদ্রাসার ভেতরে আশ্রায় নেয় এবং ঘটনা জেসমিন নাহার ও ফৌজিয়া আক্তার মোবাইল ফোনে তাদের আত্মীয়স্বজনদের জানান। তখন বখাটে যুবকরা নিজেদের বাঁচাতে এবং মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ফোন করে জিয়ানগর থানায় জানায়। এলাকবাসীর কাছে বখাটে হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগ ক্যাডারদের ফোন পেয়ে ছুটল পুলিশ। গ্রেফতার করল তানিয়া, ফৌজিয়া ও জেসমিনকে। তাদেরকে তল্লাশি করা হয়। কিন্তু তাদের কাছ থেকে অবৈধ কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তারপরও তাদের গ্রেফতার করা হয়। অর্থাৎ বোরকা পরার "অপরাধে" তিন জন মহিলার বিভীষিকাময় ২০ দিনের কাহিনীর শুরু!

৪ জুলাই ২০০৯ইং- বিশিষ্ট আলেমদের প্রতিবাদ
পিরোজপুরে পর্দানশীল মহিলাদের হয়রানির প্রতিবাদ বিশিষ্ট আলেমদের- আটকদের নি:শর্ত মুক্তি দাবি
দেশের বিশিষ্ট আলেমগণ এঘটনার প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন বোরকা পরা ধার্মিক পর্দানশীল নিরীহ মহিলাদের অযথা হয়রানি ও অপমানিত করার জন্যই সরকারি দলের বখাটে যুবকরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা অবিলম্বে এদের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।

৫ জুলাই ২০০৯ইং- অবৈধ কোনো কিছু পাওয়া যায়নি তারপরও মামলা এবং জামিন নামঞ্জুর বান্ধবীরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে জিয়ানগরের ৩ ছাত্রী হাজতে জামিন নামঞ্জুর
শেখ মুনির, আফজাল, হিরণ সহ ছাত্রলীগের যে বখাটে গুলোর নির্দেশে পুলিশ ওই ৩ জন ছাত্রীকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন সহ বিভিন্ন রকম অভিযোগ আছে। তাদের নির্দেশেই পুলিশ বোরকা পরিহিত ৩ জন মহিলাকে গ্রেফতার করে।

৯ জুলাই ২০০৯ইং- কোন অভিযোগ নেই, তারপরও পুলিশের রিমান্ডের আবেদন!
জিয়ানগরে আটক ৩ তরুণীর রিমান্ডের আবেদন প্রত্যাখ্যান : শুনানি ১৪ জুলাই
একটি রাজনৈতিক দলের মদদে পিরোজপুরের জিয়ানগরের ছাত্রলীগের বখাটে যুবকের প্ররোচনায় হয়রানি করতে আটক তিন তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জিয়ানগর থানা পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত আগামী ১৪ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেন। ওইদিন একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকের কথামতো জিয়ানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক তরুণীদের বোরখার নেকাব খুলতে বাধ্য করেন। পুলিশ তাদের বোরখা খুলে আদালতে সোপর্দ করে। অর্থাৎ ১৪ জুলাইয়ের আগে তাদের আর কারাগার থেকে বের হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই।

বাংলাদেশে নিয়মিত নারী নির্যাতিত হচ্ছে। পুলিশ সহ সুশীল সমাজ যদি খবর পেয়ে থাকে তখন সবাই নির্যাতিত মহিলার পক্ষে অবস্থান নেয়। কিন্তু এ ঘটনায় দেখা গেল ব্যাতিক্রম। সেই ব্যাতিক্রম করার কারণ হলো এই মহিলা গুলো ছিল "পর্দা বা বোরকা পরা"। এদের নিয়ে আরো বিচিত্র আরো নির্মম আচরণ পুলিশ ও আওয়ামী লীগ করেছে....

বোরকা পরার "অপরাধে" আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে নির্যাতিত তিন মুসলিম মহিলার কাহিনীঃ ধারাবাহিক-২

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন